রবিবার

মৌমাছি, বোলতা, ভিমরুল বা পোকার কামড়

মৌমাছি, বোলতা, ভিমরুল, বিছা বা বিষাক্ত পোকায় কামড়ালে চিকিৎসা


এখানে যা থাকছে---

  • মৌমাছি কামড়ালে করণীয়
  • বোলতা ও ভিমরুল বা বিছা কামড়ালে চিকিৎসা
  • বিষাক্ত পোকামাকড়ে কামড়ালে করণীয়
  • হুল ফোটালে ঘরোয়া ওষুধ ও চিকিৎসা


মৌমাছি কামড়ালে করণীয়, বোলতা ও ভিমরুল বা বিছায় কামড়ালে চিকিৎসা, বিষাক্ত পোকামাকড়ে কামড়ালে করণীয়,  হুল ফোটালে ঘরোয়া ঔষুধ ও চিকিৎসা
মৌমাছি, বোলতা, ভিমরুল কামড়ালে চিকিৎসা


মৌমাছি (Bee), বোলতা বা বল্লা, ভিমরুল, বিছা বা কোনো বিষাক্ত পোকায় হুল ফুটালে বা কামড়ালে আমরা অসহ্য যন্ত্রনা অনুভব করি। শিশুদের বেলায় এই যন্ত্রনা আরো মারাত্মক। অনেক সময় শরীরে বেশি পরিমানে বিষ ঢুকলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মৌমাছি, বোলতা বা বল্লা, ভিমরুল বা কোনো বিষাক্ত পোকা কামড়ালে তাই দ্রুত ফার্স্ট এইড বা প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি ঘরোয়া ও ডাক্তারি চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিৎ। আমাদের আজকের আলোচনা মৌমাছি, বোলতা বা বল্লা, ভিমরুল বা কোনো বিষাক্ত পোকা মাকড়ে কামড়ালে প্রাথমিক করণীয়, যন্ত্রনা উপশমের ঘরোয়া ও ডাক্তারি নানারকম চিকিৎসা ও পদ্ধতি নিয়ে।



মৌমাছি, বোলতা বা ভিমরুলে কামড়ালে যন্ত্রনা হওয়ার কারণঃ

বিশাক্ত পোকামাকড় কামড়ানোর সাথে সাথে হুলের সাহায্যে বিষ ঢুকিয়ে দেয়। অর্থাৎ হুল বা বিষ গ্রন্থি থেকে এসিড নিঃসৃত হয়। এসব পোকামাকড়ের হুলে বা বিষ থলিতে ফরমিক এসিড থাকে। হুল ফুটালে বা কামড়ালে আমাদের দেহে ফরমিক এসিড প্রবেশ করায় অসহ্য যন্ত্রনা বা জ্বালা অনুভূত হয়। 



কোন ধরনের পদার্থ বিষ বা এসিড নিষ্ক্রিয় করেঃ

হুল ফোটালে শরীরে বিষ বা এসিড প্রবেশ করার ফলে সাধারন্ত বিষক্রিয়া দেখা দেয়। তাই এন্টিএসিড বা ক্ষার ব্যবহার করলে বিষ নিষ্ক্রিয় হয়। সুতারং মৌমাছি, বোলতা বা ভিমরুলে কামড়ালে বা পোকামাকড়ে কামড়ালে বিষ নিষ্ক্রিয় করার জন্য ক্ষারীয় পদার্থ বা ওষুধ ব্যবহার করতে হবে। অর্থাৎ মৌ মাছি হুল ফুটালে ফরমিক এসিড নিঃসৃত হয় এবং ক্ষার ব্যবহার করলে উপশম পাওয়া যায়।



মৌমাছি, বোলতা বা ভিমরুলে কামড়ালে ফার্স্টএইড বা প্রাথমিক চিকিৎসাঃ

মৌমাছি কামড়ালে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মৌমাছির হুল কামড়ানো স্থানে রেখে যায় বা মৌমাছি সহ রয়ে যায়। এমন অবস্থায় আংগুলের সাহায্যে আস্তে করে নাড়িয়ে নাড়িয়ে হুল উঠিয়ে ফেলতে হবে। কোনোক্রমে হুল ধরে টেনে তোলা যাবে না। টেনে তুললে চাপ লেগে হুলে থাকা বিষ শরীরে প্রবেশ করবে ফলে আরো বেশি যন্ত্রনা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়া বিছা বা এমন কোনো বিষাক্ত পোকামাকড় হুল ফোটালে চুল অথবা নারিকেলের খোসার ভিতরের মোলায়েম অংশ দিয়ে ধীরে ধীরে ঘষে হুল ওঠাতে হবে। এবার এন্টিসেপ্টিক সাবান বা স্যাভলন দিয়ে হালকা গরম পানি সহকারে ক্ষত স্থান পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে ক্ষত স্থানে বা কামড়ানো স্থানে চেপে ধরতে হবে।  বরফের ঠান্ডা স্পর্শে কামড়ানো স্থানের রক্ত প্রবাহে বাধা পাওয়ায় যন্ত্রনা অনেকটা কমতে থেকে।



হুল ফোটালে বা কামড়ালে ঘরোয়া চিকিৎসা বা করণীয়ঃ

  • ১. মধু ব্যবহার- মৌমাছি বা মধুর মাছিতে কামড়ালে বা হুল ফুটালে কামড়ানো স্থানে মধু মাখিয়ে দিলে অনেকটা উপশম পাওয়া যায়। জ্বালা যন্ত্রনা কমে ফলে উপশম হয়।
  • ২. মাটির ব্যবহার- কিছুটা মাটি পানির সাথে মিশিয়ে কাদা কাদা করে কামড়ানো স্থানে লাগালে অনেকটা উপশম পাওয়া যায়।
  • ৩. টুথপেস্ট ব্যবহার- টুথপেস্ট এক ধরণের ব্যথানাশক এবং জীবাণুনাশ। তাই মৌমাছি, বোলতা বা ভিমরুল বা পোকামাকড়ে কামড়ালে সেখানা টুথপেস্ট ব্যবহার করলে ব্যথা ও যন্ত্রণা দ্রুত উপশম হয়।
  • ৪. রসুন ব্যবহার- রসুন এক ধরনের এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। তাই মৌমাছি, বোলতা বা ভিমরুলে বা পোকায় কামড়ালে ক্ষত স্থানে রসুন বেটে বা ঘসে দিলে বা রসুনের রস ব্যবহার করলে উপশম পাওয়া যায়।
  • ৫. চুন ব্যবহার- চুন এক ধরণের ক্ষারীয় পদার্থ। কামড়ানো স্থানে চুন ব্যবহার করলে বিষ বা এসিড ধ্বংস হতে থাকে ফলে দ্রুত উপশম পাওয়া যায়।
  • ৬. বেকিং সোডা ব্যবহার- বেকিং সোডা এক ধরণের ক্ষারীয় পদার্থ। আর ক্ষারীয় পদার্থ এসিড নিরাময়কারী তাই বেকিং সোডা ও পানি মিশিয়ে কাদা কাদা করে ফোলা স্থানে লাগিয়ে রাখলে উপশম পাওয়া যায়। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে পুনরয় লাগাতে হয়। ব্যথা কমে না যাওয়া পর্যন্ত এটা এভাবে ব্যবহার করতে হয়।



বিষাক্ত কিছুতে কামড়ালে ডাক্তারি ফর্মুলা বা চিকিৎসাঃ

  • ১. এন্টিসেপ্টিক ক্রিম ব্যবহার- কামড়ানো বা হুল ফুটানো স্থান পরিষ্কার করে সেখানে এন্টিসেপ্টিক ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
  • ২. এন্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট সেবন- কামড়ানো স্থানে এন্টিসেপ্টিক ক্রিম ব্যবহারের পাশাপাশি মুখে এন্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট সেবন করলে বিষক্রিয়া ও চুলকানি কমতে থাকে।
  • ৩. প্যারাসিটামল ট্যাবলেট সেবন- এন্টিহিস্টামিন ট্যাবলেটের সাথে ব্যথা ও ফোলা দ্রুত উপশমের জন্য প্যারাসিটামল ট্যাবললেট যেমন নাপা ট্যাবলেট সেবন করলে দ্রুত ব্যাথা বা ফোলা ও শরীরের জ্বর জ্বর ভাব বা তাপমাত্রা কমতে থাকে।



বিশেষ করণীয়ঃ

ভিমরুল বা মৌমাছি অতিরিক্ত পরিমানে কামড়ালে প্রচুর ব্যথা, ফোলা, মাথাঘোরা, বমি আসা, চুলকানি,  এলার্জি বা শরীরে জ্বর দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসক বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। মনে রাখতে হবে বিষক্রিয়া মারাত্মক আকার ধারন করলে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে বা দীর্ঘ মেয়াদী সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ মতে ঔষুধ গ্রহণ আবশ্যক।



সকলের শুভকামনায়---

কে-মাহমুদ

১৮-০৪-২১

নিচের বক্সে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নিকট খুবি গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার কমেন্টের উত্তর আমরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দিতে চেষ্টা করবো। আমাদের সাথেই থাকুন।
1timeschool.com
EmoticonEmoticon