সোমবার

ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায়

ল্যাপটপ কেনার আগে করণীয় - ভালো ল্যাপটপের বৈশিষ্ট্য


এখানে যা থাকছে---

  • ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায়
  • ল্যাপটপ কেনার আগে যা জানা প্রয়োজন
  • ল্যাপটপ কনফিগারেশন কেমন হওয়া উচিৎ
  • বাজেটের মধ্যে ভালো ল্যাপটপ
  • কম দামে ভালো ল্যাপটপ

ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায়, ল্যাপটপ কেনার আগে যা জানা প্রয়োজন, ল্যাপটপ কনফিগারেশন কেমন হওয়া উচিৎ, বাজেটের মধ্যে ভালো ল্যাপটপ, কম দামে ভালো ল্যাপটপ
ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায়


ল্যাপটপ কেনার আগে যে সকল প্রশ্ন সামনে আসেঃ

  • ১. বাজেটের মধ্যে ভালো ল্যাপটপ কিভাবে পেতে পারি?
  • ২. ভালো ল্যাপটপের কনফিগারেশন কেমন হওয়া উচিৎ?
  • ৩. ভালো ল্যাপটপে কি কি থাকতে হয়?
  • ৪. ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায় কি?
  • ৫. ভালো মানের ল্যাপটপ চেনার উপায় গুলো কি?
  • ৬. ল্যাপটপ কেনার আগে কি কি জানা দরকার?
  • ৭. ভালো মানের গেমিং ল্যাপটপে কি কি থাকে?
  • ৮. গ্রাফিক্স ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং এর জন্য কেমন ল্যাপটপ কেনা উচিৎ?
  • ৯. অনলাইনে নাকি অফলাইনে ল্যাপটপ ক্রয় করা উচিৎ?
  • ১০. ল্যাপটপের ডিসপ্লে সাইজ কেমন হলে ভালো হয়?



ভালো মানের ল্যাপটপ বাছাই বা পছন্দ করার উপায়ঃ

বাজেটের মধ্যে ভালো মানের ল্যাপটপ ক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় অবশ্যই মনে রাখা প্রয়োজন। আপনি যে কাজের জন্য ল্যাপটপটি ক্রয় করতে চান তার উপযোগী ল্যাপটপ নির্বাচনের পাশাপাশি দ্রুত কাজ করবে এমন হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যার সম্বলিত ল্যাপটপ বাছায় করা উচিত। নিম্নে ল্যাপটপ কেনার আগে বিবেচ্য বিষয় গুলো ধারাবাহিক ভাবা তুলে ধরা হল।



১. উদ্দেশ্য নির্ধারণঃ

ল্যাপটপ কেনার আগে অবশ্যই উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে। ভালো ল্যাপটপ কম্পিউটার কাজের উপযোগী করতে এটি ব্যবহারের উদ্দেশ্য নির্ধারণ আবশ্যক একটি বিষয়। অফিসের টুকটাক কাজের জন্য যেমনি হাই কনফিগারেশন বা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত ল্যাপটপ যেমনি প্রয়োজন নয় তেমনি উন্নত মানের ভিডিও এডিটিং এর জন্য কম কনফিগারেশন বা বৈশিষ্ট্যের ল্যাপটপ উপযুক্ত নয়। তাই ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ক্রয়ের আগে অবশ্যই এটি ব্যবহারের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে।



২. বাজেট নির্ধারণঃ

উদ্দেশ্য নির্ধারণ করলেন কিন্তু সেই কাজের উপযোগী ভালো মানের ল্যাপটপ ক্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সঙ্গতি যদি আপনার না থাকে তবে আপনি তা ক্রয় করতে পারবেন না। তাই ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ক্রয়ের আগে অবশ্যই আপনাকে প্রয়োজনীয় মূলধন সংগ্রহ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী সামর্থের মাঝে বাজেট নির্ধারণ করতে হবে।



৩. উইন্ডোজ বা অপারেটিং সিস্টেম নির্ধারণঃ

ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে বর্তমানে যে সকল অপারেটিং সিস্টেম জনপ্রিয় তার মধ্যে মাইক্রোসফট নির্মিত উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম খুবি জনপ্রিয়। তবে বর্তমানে এপোল নির্মিত ম্যাক অপারেটিং সিস্টেমো দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের লেটেস্ট ভার্সন ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে উন্ডোজ ১০ খুবি জনপ্রিয়। তবে উন্ডোজ ১১, উন্ডোজ ১২, উন্ডোজ ১৩ পর্যন্ত ভার্সন বা এর চেয়ে বেশি ভার্সন বেরিয়ে গেছে। যত লেটেস্ট ভার্সন হবে ততোই তাতে ভালো মানের সুবিধা ও ফিচার পাওয়া যাবে। তাই ভালো মানের ল্যাপটপ ক্রয়ের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন ল্যাপটপে উইন্ডোজের সর্বশেষ ভার্সন ইন্সটল করা থাকে।



৪. সিপিইউ (CPU) নির্বাচনঃ

সিপিইউ ল্যাপটপের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সিপিইউ এর গতির উপর ল্যাপটপের কার্যক্ষমতা নির্ভরশীল। বর্তমানে জনপ্রিয় সিপিইউ হিসেবে ইনটেল বেশ প্রচলিত। এছাড়া এএমডি দিনদিন জবপ্রিয় হয়ে উঠছে। সিপিইউ এর কার্যক্ষমতার উপর নির্ভর করে ইনটেল সিপিইউ বা ইনটেল প্রসেসর কে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয় যথা- সিংগেল কোর, ডুয়েল কোর, কোর আই থ্রি, কোর আই ফাইভ, কোর আই সেভেন ইত্যাদি। যত বেশি কোর হবে প্রসেসর বা সিপিইউ এর গতি ততো বেশি হবে। এছাড়া যতই দিন যাচ্ছে ততই প্রসেসর উন্নত হচ্ছে। তাই লেটেস্ট জেনারেশনের প্রসেসর এবং বেশি কোর যুক্ত প্রসেসর বেশি শক্তিশালি। মূল্যের দিকে বিবেচনায় সাধারণ কাজের জন্য কম জেনারেশন ও কম কোরের প্রসেসর যুক্ত ল্যাপটপ যথেষ্ট তবে গেমিং বা হাই রেজুলেশন যুক্ত ভিডিও এডিটিং এর জন্য বেশি জেনারেশন এবং কোর আই ফাইভ বা কোর আই সেভেন যুক্ত প্রসেসর উপযুক্ত।



৫. ডিসপ্লে নির্বাচনঃ

ভালো মানের ডিসপ্লে ছাড়া জীবন্ত ছবি পাওয়া যায় না। যদি আপনি গেমিং বা ভিডিও এডিটিং বা ছবি এডিটিং এর জন্য ল্যাপটপ ব্যবহার করতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে একটি ভালো মানের ডিসপ্লে সম্বলিত ল্যালটপ বাছাই করতে হবে। 1366*768 রেজোলিউশন এর চেয়ে কম রেজোলিউশনের ডিসপ্লে লো কোয়ালিটির হয়ে থাকে। দামো কম, সাধারণ কাজের জন্য তেমন কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু ভিডিও এডিটিং ও গেমিং বা মুভি দেখার জন্য হাই রেজোলিউশন এর ডিসপ্লে উত্তম। বর্তমানে ডিসপ্লে দিনদিন উত্তত থেকে উন্নতর হচ্ছে। ভালো মানের ডিসপ্লে পেতে এর রেজোলিউশন FHD বা 1920*1080 বা 1080p হওয়া উচিত। বাজেট একটু বেশি হলে আরো ভালো মানের ডিসপ্লে নেওয়া যেতে পারে। Retina ডিসপ্লে বা 2304*1440 রেজোলিউশন এর ডিসপ্লে আরো ভালো আরো জীবন্ত। বর্তমানে হাই কোয়ালিটির ল্যাপটপে QHD বা 2k ডিসপ্লে পাওয়া যায় যার রেজোলিউশন 2560*1440 হয়ে থাকে। মনেরাখতে হবে ডিসপ্লের রেজোলিউশন যত বাড়বে মান ততো ভালো হবে ছবি ততো জীবন্ত হবে কিন্তু দাম ততো বেশি হবে।



৬. স্ক্রিন সাইজ ও ওজন নির্ধারণঃ

রেজোলিউশন দেখার সাথে সাথে ল্যাপটপের স্ক্রিন সাইজ বা ল্যাপটপের আকার ও ওজন অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ল্যাপটপের স্ক্রিন সাইজ ১৩ বা ১৪ ইঞ্চি হওয়া বেটার। এর চেয়ে ছোট বা বড় সাইজের স্ক্রিন নির্ভর করবে আপনার কাজের উপর। এডিটিং এর কাজের জন্য বড় মাপের স্ক্রিন বা বড় মাপের ল্যাপটপ বেশি উপযুক্ত। এছাড়া ল্যাপটপ যদি বেশির ভাগ সময় বাসার বাইরে ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তবে হাল্কা ওজনের ল্যাপটপ পছন্দ করা উচিত। ১ থেকে ২ কেজি ওজনের মধ্যে ভালো ল্যাপটপ পাওয়া যায়।



৭. ব্যাটারি কোয়ালিটি নির্বাচনঃ

ল্যাপটপের ব্যাটারি ব্যাকআপ খুবি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনি যদি ভ্রমণ পিপাসু হন এবং আপনাকে দীর্ঘ সময় বাসার বাইরে থাকতে হয় তবে আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারি ব্যাকাপ বেশি হওয়া উচিত। ল্যাপটপ কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে এর ব্যাটারি ব্যাকআপ কত ঘন্টা। ৭-৮ ঘন্টা ব্যাকআপ দেয় এমন ল্যাপটপ খুবি ভালো তবে ৪-৫ ঘন্টা ব্যাটারি ব্যাকাপ দেয় এমন হলে স্বাভাবিক ভাবেই ভালো। গেম বা মুভি দেখার জন্য ল্যাপটপের ব্যাটারি ব্যাকাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখতে হবে ল্যাপটপের ব্যাটারিতে চার্জ যত বেশি সময় স্থায়ী থাকবে আপনি ল্যাপটপ ব্যবহার করে ততো বেশি সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।



৮. কি বোর্ড কোয়ালিটি নির্বাচনঃ

ল্যাপটপের কী বোর্ড যদিও তেমন কোনো সমস্যার বিষয় নয়। তাই অনেকে ল্যাপটপ কেনার আগে এর কী বোর্ড ও টাচ প্যাড সম্পর্কে জেনে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ মনেকরে না। তবে অনেক সময় দেখা যায় কী বোর্ড প্রেস করে আপনি কমফোর্টেবল ফিল করছেন না বা আরাম পাচ্ছেন না সে ক্ষেত্রে খুবি সমস্যা দেখা



৯. র‍্যাম, হার্ডওয়ার ও এসএসডি নির্ধারণঃ

ল্যাপটপের গতি অনেকাংশে র‍্যাম (RAM) বা Random Access Memory এর উপর নির্ভরশীল। তাই ল্যাপটপের র‍্যাম বেশি থাকা জরুরী। সাধারন্ত কমপক্ষে ৪ থেকে ১৬ জিবি র‍্যাম যুক্ত ল্যাপটপ হলেই দ্রুত কাজ করা যাবে। এছাড়া গতি বৃদ্ধির জন্য ও তথ্য সংরক্ষণের জন্য হার্ড ডিক্স ড্রাইভ (HDD) কমপক্ষে ৫০০ জিবি থেকে বেশি মেমরি থাকা উচিত। ল্যাপটপের গতি আনতে বর্তমানে অনেকে এসএসডি (SSD) মেমরি ব্যবহার করে থাকে। এসএসডি এর ক্ষেত্রে ২৫০ জিবি এর বেশি এসএসডি মেমরি থাকলে ভালো হয়। এসএসডি মেমরির দাম সাধারণ মেমরির চেয়ে কিছুটা বেশি হওয়ায় ল্যাপটপের মূল্য কিছুটা বেশি পড়বে।



১০. ল্যাপটপ রিভিউঃ

সর্বোপরি একটি ভালো ল্যাপটপের রিভিউ এমন থাকা উচিত - Windows 10 বা 11, Monitor এর resolution 1920 x 1080, Monitor এর Size 13" x 14", Battery backup কমপক্ষে ৩-৪ ঘন্টা, CPU বা Processor কমপক্ষে ডুয়াল বা কুয়াড বা তার চেয়ে বেশি i Core, Generation যথা সম্ভব লেটেস্ট।



উপরোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করে ল্যাপটপ ক্রয় করলে আশা করি একটি ভালো ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারবেন। এছাড়া যে সে কোম্পানির ল্যাপটপ ক্রয় না করে ভালো ও প্রচলিত ব্রান্ডের ল্যাপটপ ক্রয়ের উপরো জোর দেওয়া উচিত, তাহলে সহজে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ পার্টস রিপ্লেস সহ সহজেই সার্ভিস সেন্টার পেয়ে যাবেন।

নিচের বক্সে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নিকট খুবি গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার কমেন্টের উত্তর আমরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দিতে চেষ্টা করবো। আমাদের সাথেই থাকুন।
1timeschool.com
EmoticonEmoticon