শুক্রবার

চালকুমড়া চাষ - আধুনিক পদ্ধতি

চাল কুমড়া বা জালি কুমড়া চাষ - রোগবালাই ও পোকা দমন


এখানে যা থাকছে---

  • আধুনিক পদ্ধতিতে চালকুমড়া চাষ
  • চালকুমড়ার ফলন বাড়ানোর উপায়
  • জালি বা ঝালি কুমড়া চাষ পদ্ধতি
  • চাল কুমড়া গাছের পোকা দমন
  • চালকুমড়ার রোগবালাই ও প্রতিকার

আধুনিক পদ্ধতিতে চালকুমড়া চাষ, চালকুমড়ার ফলন বাড়ানোর উপায়, জালি বা ঝালি কুমড়া চাষ, চাল কুমড়া গাছের পোকা দমন, চালকুমড়ার রোগবালাই ও প্রতিকার
আধুনিক পদ্ধতিতে চালকুমড়া চাষ


চাল কুমড়া একটি জনপ্রিয় সব্জি। এটি খেতে খুবি মজাদার। অবহেলা আর অনাদরে বাড়ির আনাচে কানাচে, বনে বা আঙ্গীনাতে এটি জন্মালেও বর্তমানে এটি আর অবহেলার সব্জি নয়। বাজারে ব্যপক চাহিদা থাকায় এটি কৃষকের সব্জি ফসলের তালিকায় যোগ করেছে এক নতুন মাত্রা। শুরু হয়েছে খামারে চাষাবাদ। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে চালকুমড়া থেকে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব। আমাদের আজকের আলোচনা আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নতমানের হাইব্রীড ও দেশি চালকুমড়া বা জালি কুমড়া চাষ পদ্ধতি ও চালকুমড়ার ফলন বৃদ্ধির উপায় ও করণীয় সম্পর্কে।


চালকুমড়ার উৎপত্তি ও নামকরণঃ

চালকুমড়া কে গ্রাম্য ভাষায় চালকুমড়ো বলা হয়ে থাকে। আঞ্চলিক ভাবে চালকুমড়া কে অনেকে জালিকুমড়া বা জালি বলে থাকে। অনেকে অঞ্চলে একে চালকুমরা বা চালকুমরো নামে ডাকা হয়। বিশ্ব জ্ঞানকোষ উইকিপিডিয়া এর তথ্য মতে চালকুমড়াকে ইংরেজিতে Wax Gourd বা Winter Melon বা Winter Gourd বলা হয়ে থাকে। সাদা রং বা আবরনের কারনে চাল কুমড়ার ইংরেজি  White Gourd করা হয়েছে। এ ছাড়া ইংরেজিতে চাল কুমড়া কে Tallow gourd বা Ash Gourd বা Chinese Preserving Melon সহ নানান নামে ডাকা হয়ে থাকে। চালকুমড়া কুষ্মাণ্ড বা কুমড়ো জাতীয় সবজি। ঘরের চাল বা চালায় চাষ করা হয় বলে একে চালকুমড়া বলা হয়ে থাকে। অন্যদিকে কাচা ও জালি অবস্থায় সবজি হিসাবে খাওয়া হয় বলে একে জালিকুমড়াও বলা হয়।


চালকুমড়ার বীজ সংগ্রহঃ

সাধারনত বড় ও রোগমুক্ত সুস্থ সবল চালকুমড়ো বা চালকুমড়া বীজ সংগ্রহের জন্য নির্বাচন করা উচিৎ। পাকা চালকুমড়া কেটে বীজ বের করে জলে ভিজিয়ে ধুয়ে বা পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। পরিষ্কার করে নেওয়া বীজ পরপর কয়েকদিন রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। শুকানো বীজে কার্বনডাইজিম জাতীয় ছত্রাক নাশক মিশিয়ে বয়েমে বা পাত্রে মুখ আটকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। রোদে শুকানোর পর সরাসরি বীজ বপন করতে চাইলে কার্বনডাইজিম জাতীয় ছত্রাক নাশক মিশিয়ে বপন করতে হবে। বর্তমানে বাজারে নানান জাতের বীজ প্যাকেটজাত আকারে পাওয়া যায়। বাংলাদেশে লাল তীর, বিডি বীজ, এসিআই সহ নানা বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্টান উন্নত পদ্ধতিতে সংরক্ষিত ভালো মানের হাইব্রীড চালকুমড়া বীজ বাজারজাত করে থাকে, যা চাষিদের জন্য খুবি উপকারি।


চালকুমড়া বীজ বপনের সময়ঃ

এটেল বা এটেল দোয়াশ মাটি চাল কুমড়া চাষের জন্যে ভালো। সারা বছর চাল কুমড়ার চাষ হলেও  চৈত্র থেকে জ্যৈষ্ঠ পর্যন্ত বীজ বপনের উপযুক্ত সময়। তবে হাইব্রীড জাতের বীজ বপনে জাত উপযোগী সময় বেছে নেওয়া উচিত।



চাল কুমড়ার জাত নির্বাচনঃ

চাল কুমড়ার অনেক জাত রয়েছে। দেশি জাতের পশা পাশি কৃষকেরা ঝুকছে হাইব্রীড জাতের দিকে। হীরা, সবুজ, ভৈরবী, ওয়ান্ডারফুল, জুপিটার, পোলস্টার, দূরন্ত, দূর্বার হাইব্রীড জাতগুলির মধ্যে অন্যতম। নিম্নে জনপ্রিয় কয়েকটি হাইব্রীড জাতের তথ্য তুলেধরা হলো-

  • হীরা - ৪৫১:: উচ্চ ফলনশীল হাইব্রীড জাতের মধ্যে হীরা বেশ জনপ্রিয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন এ জাতের চালকুমড়া দূর-পরিবহনযোগ্য, রং গাঢ় সবুজ, ওজন ১ - ১.৫ কে.জি, সারা বছর চাষযোগ্য, ৫০ - ৫৫ দিনে ফল আসে। খেতেও খুব সুস্বাদু।
  • ওয়ান্ডারফুল:: রং সবুজ এবং ফলের গড় ওজন ১.৫-২.০ কেজি গাছ প্রতি ৮-১০টি ফল ধরে, মেয়াদ চৈত্র-কার্ত্তিক, ফল আসতে সময় লাগে ৪০ - ৪৫ দিন, লম্বা ২৫ - ৩০ সে.মি।
  • সুমাইয়া:: পাকা চালকুমড়া হিসাবে উৎপাদনে এটি বেশ জনপ্রিয়, সহজে পরিবহন যোগ্য, রং সবুজ, আকার লম্বাটে-গোল, একর প্রতি ফলন ১২ টন। রোপনের ৫০ দিন পর ফল ধরে।
  • সবুজ(উপশী):: ভাইরাস, পাওডারি ও ডাইনি মিল্ডিউ সহনশীল,  এ জাতের ওজন ২ - ২.৫ কেজি রং গাঢ় সবুজ, বপন কাল মাঘ - চৈত্র, একর প্রতি উৎপাদন ২৫ - ৩০ টনের মত, ৬০ - ৬৫ দিনে ফল ধরে, লম্বা ১০ - ১২ ইঞ্চি হয়ে থাকে।
  • ভৈরবী:: এ জাতের চালকুমড়া সারা বছর চাষ করা যায় তবে শীত কালে চাষ করার অনুপযুক্ত। এ জাতের চালকুমড়ো বা কুমড়াগাছে ৪০ - ৪৫ দিনে ফল ধরতে শুরু করে। কচি অবস্থায় গায়ের রং সবুজ এবং গড় দৈর্ঘ্য ২০-২৫ সে.মি  এর মতো হয়ে থাকে। আধুনিক চাষাবাদে একর প্রতি ১০ - ১৫ টনের মত ফলন হয়ে থাকে।
  • জুপিটার এফ-১:: ১৮ - ২০ সে.মি লম্বা, রং গাঢ় সবুজ, ওজন১.৫ কে.জি, ৫০-৫৫ দিনে ফসল তোলা যায়, শতক প্রতি বীজ ১.৫ গ্রাম, ফলন ১৮ থেকে ২০ টন।
  • পোলস্টার এফ-১:: এ জাতের চালকুমড়ার গড় দৈর্ঘ্য ২০ থেকে ২৫ সে.মি হয়ে থাকে। এ জাতের চাল কুমড়ার গায়ের রং কচি অবস্থায় হালকা-সবুজ, গড় ওজন ১.৫ কে.জি এর মত। আধুনিক পদ্ধতিতে চাষ করলে একর প্রতি ১৮ থেকে ২০ টনের মত ফলন পাওয়া যায়। সাধারণত ফেব্রু-আগষ্ট মাস পর্যন্ত এ জাতের চালকুমড়া চাষ করা হয়। চারা রোপনের ৫০-৫৫ দিনের মাঝে ফসল বাজারে তোলা যায়। বীজ বপনের জন্য শতাংশ প্রতি ১.৫ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়। ৪৫ থেকে ৫০ দিনে ফসল বাজারে তোলা যায় এবং খেতে ভালো, সারা বছর চাষযোগ্য হলেও শীতকালে সম্ভব নয়, ২০-২৫ সে.মি লম্বার এ জাতের চালকুমড়ার রং সবুজ ও ওজন ১.৫ কেজির মত হয়ে থাকে।
  • দূরন্ত:: এ জাতের চালকুমড়া সাধারণত ফেব্রু- আগষ্ট কালীন চাষ উপযোগী ফসল। কচি বা জালি অবস্থায় এ জাতের গায়ে সবুজ রং ধারণ করে। এ জাতের চাল কুমড়া ২০-৩০ সে.মি লম্বা হয়। প্রতিটি ফলের গড় ওজন ১.৫ কে.জি এর মত হয়ে থাকে। চারা রোপনের পর গাছ থেকে ৫০-৫৫ দিনে জালি ফল বাজারে তোলা যায়।


চালকুমড়া গাছে সার প্রয়োগঃ

আধুনিক পদ্ধতিতে চালকুমড়া চাষ, চালকুমড়ার ফলন বাড়ানোর উপায়, জালি বা ঝালি কুমড়া চাষ, চাল কুমড়া গাছের পোকা দমন, চালকুমড়ার রোগবালাই ও প্রতিকার
জালি কুমড়া বা চাল কুমড়া চাষ


একর প্রতি ইউরিয়া ১০-১২ কেজি, টিএসপি ৮-১০ কেজি, এমপি ৩-৫ কেজি, জিংক ১০০-১৫০ গ্রাম, জিপসাম ৩ কেজি ও পর্যাপ্ত জৈবসার প্রয়োগ করলে ফসল ভালো হয়। মাদা করার সময় সকল সার ভালোকরে মিশিয়ে রাখতে হবে এর সাত আট দিন  পর বীজ বপন করতে হবে এবং শুধু ইউরিয়া সার চারা বড় হলে কয়েক কিস্তিতে প্রয়োগ করতে হবে।


চালকুমড়ার চারা উৎপাদনঃ

মাচায় বা চালে দু ভাবেই চাল কুমড়ার চাষ করা হয়। ২.৫ ফুট চওড়া এবং ২ ফুট গভীর গর্ত করে তাতে জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে ভরাট করে কিছুদিন রেখে পরে উচু মাদা করে মাদা প্রতি ৪-৫ টি বীজ বপন করতে হয়। প্রতিটি মাদার দূরত্ব ২-২.৫ মিটার হওয়া ভালো। হাইব্রীড জাতের ক্ষেত্রে এ দূরত্ব কম বেশী হতে পারে। চারা গজালে ২ টি সবল চারা' রেখে বাকি গুলো ফেলে দিতে হবে। চারা বাওয়ার জন্য একটি বাওনি দিতে হবে এবং চারা বাওয়া শুরু করলে গোড়ার মাটি আলগা ও নিড়ানি দিয়ে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। পরে মাচা করে অধবা চালে বাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। চাল কুমড়া পানি অসহিনষু তাই মাদায় মাটি উচু সহ খেয়াল রাখতে হবে যেন জমিতে কখনো পানি না জমে।


চালকুমড়ার বিভিন্ন রোগ বালাই ও পোকা দমনঃ

চালকুমড়ার বিভিন্ন রোগ ও তার প্রতিকারের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। চালকুমড়ার একটি মারাত্মক রোগ পাতা পচা রোগ। পাতা পচা বা পাতা পোড়া বা পাতা ঝলসানো রোগ দেখা দেওয়া মাত্র দ্রুত ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হবে। ছত্রাক নাশক দিতে দেরি হলে পাতা পচা রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে। এ রোগের বিস্তারে পুরো গাছ শুকিয়ে মারা যেতে পারে। চালকুমড়া গাছের আরেকটি সমস্যা পাতা কাটা পোকার আক্রমণ। পাতা কাটা পোকা দেখা দিলে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। এছাড়া মাছি পোকা চাল কুমড়ার ব্যপক ক্ষতি করে থাকে। মাছি পোকার হাত থেকে কচি বা জালি চালকুমড়া কে রক্ষা করতে ফ্রেমন হরমনের ফাদ পাতা যেতে পারে। এ ছাড়া সাবান ও নিম পাতার রস এক সাথে মিশিয়ে স্প্রে করলে মাছি পোকা দ্রুত দমন করা যায়। মাছি পোকা চালকুমড়ার ব্যাপক ক্ষতি করে তাই এ পোকার আক্রমণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে দমন করতে হবে। মাছি পোকার হাত থেকে কীটনাশক ছাড়াও কচি চালকুমড়া রক্ষা করা যায়। সাদা পলেথিনে চালকুমড়া ভরে মুখ বন্ধ করে বেধে রাখলে এ পোকার হাত থেকে চাল কুমড়াকে সহজেই রক্ষা করা যেতে পারে।


চালকুমড়ার ফলন বৃদ্ধিতে করণীয়ঃ

কৃত্রীম পরাগায়নের মাধ্যমে চাল কুমড়ার ফলন বাড়ানো সম্ভব। পরাগায়নের অভাবে কচি ফল ঝরে পড়ে বা শুকিয়ে যায়। সকালে যত তাড়া তাড়ি সম্ভব পুরুষ ফুল ছিড়ে স্ত্রী বা ফল আসা ফুলের গর্ভে পুরুষ ফুলের পরাগ রেনু লাগিয়ে পরাগায়ন ঘটালে প্রায় প্রতিটি ফল দ্রুত বড় হবে এবং ঝরে পড়া হ্রাস পাবে, আকারে বড় হবে ফলে ফলের বাজার মূল্যও বৃদ্ধি পাবে।


চাল কুমড়ার ব্যবহার ও উপকারিতাঃ

চাল কুমড়া কচি অবস্থায় সাধারণত বেশি খাওয়া হয়। তবে জালি বা পাকা উভয় ভাবেই রান্না করে বা সব্জি হিসাবে অনেকে খায়। চাল কুমড়ার উপকারিতা অনেক। নানা পদের চাল কুমড়া রেসিপি খুবি সুস্বাদু ও মজাদার। চালকুমড়ায় রয়েছে প্রচুর ভিটামিন। এটি ক্যালসিয়াম এর চাহিদাও পুরোন করে থাকে। এছাড়া এতে শর্করা, আমিষ ও চর্বি সহ নানা খনিজ উপাদান রয়েছে যা মানব দেহের জন্য খুবি উপকারি। পাকা চাল কুমড়ার বড়ি বা বড়া বাঙ্গালীর এক জনপ্রিয় খাবার। বড়ি বা বড়া হিসেবে চালকুমড়া সারা বছর সংরক্ষন করে খাওয়া যায়। চাল কুমড়ার বীজ ক্রিমি নাশক হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া চাল কুমড়ার অনেক ঔষধি গুন রয়েছে। চাল কুমড়ার মোরব্বা খুবি জনপ্রিয় একটি খাবার। চাল কুমড়ার পাতা সব্জি হিসাবে খাওয়া যেতে পারে।  পুরুষ চাল কুমড়া ফুল বেটে ডিমের সাথে মিশিয়ে বড়া ভাজা খুবি মজাদার। পাকা বা বতি চালকুমড়া সারা বছর সংরক্ষন করে রাখা যায়। তাই চাল কুমড়ার অভাব জ্ঞাপক সব্জি বা আপদ কালীন সবজি হিসাবে সুনাম অনেক। চাল কুমড়া কেটে রোদে শুকিয়ে শুটকি হিসাবে সংরক্ষন করা যায়। সব্জি হিসাবে চালকুমড়া শুটকি খুবি পুষ্টি কর ও মুখরোচক খাবার।


আশাকরি আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি গ্রহণের মাধ্যমে আমরা ফসলের গুণগত মান বৃদ্ধির সাথে সাথে অধিক পরিমাণে চালকুমড়া বা চালকুমড়ো বা জালিকুমড়া উৎপাদন করে দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবো। চালকুমড়ার আধুনিক চাষাবাদ আত্মকর্মসংস্থানে আগ্রহী প্রতিটি উদ্যোক্তা ও কৃষকের এক অন্যতম উপায় হতে পারে। সমন্বিত চাষাবাদ পদ্ধতিতে পুকুর বা খামারের পাশে চালকুমড়া অতি সহজেই চাষ করা যায়। আধা ছায়া বা ছায়াযুক্ত স্থানে অন্যকোন ফসল উৎপাদন ভালো না হলেও চালকুমড়া ছায়া যুক্ত স্থানেও চাষ বা উৎপাদন সম্ভব।



সকলের শুভকামনায়----
কে-মাহমুদ
০৪-০৬-২১

নিচের বক্সে কমেন্ট করুন। আপনার প্রতিটি কমেন্ট আমাদের নিকট খুবি গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার কমেন্টের উত্তর আমরা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব দিতে চেষ্টা করবো। আমাদের সাথেই থাকুন।
1timeschool.com
EmoticonEmoticon